সাধারণ মানুষের কাছে শেয়ার মার্কেট/বাজারে ব্যবসা কত টাকা দিয়ে শুরু করা যায়? কিভাবে শুরু করা যায়? এটা খুব কঠিন একটা প্রশ্ন। আমি যখন ২০১৮ সালে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করি তখন আমিও এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলাম। তখন কিন্তু ব্যাপারটা এতটা সহজ ছিলোনা, এখন যতটা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা সহজ।
প্রথম যখন আমরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করি তখন আমাদের মধ্যে একটা প্রেসার থাকে এই অল্প টাকা কিভাবে আমরা খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার বাজার থেকে বেশি বৃদ্ধি করবো।
জীবনের প্রথম ১০,০০০ টাকা দিয়ে কিভাবে শেয়ার মার্কেট/বাজারে ব্যবসা শুরু করবো?
এখন আমি আপনাদের বলবো আপনারা শুধুমাত্র ১০০০০ টাকা দিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করবেন এবং কিভাবে ভালো পরিমান রিটার্ন পেতে সক্ষম হবেন।
অনেক বড় বড় ইউটিউবার এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা বলেন যে সুরক্ষিত কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করুন এতে আপনার টাকা লস হবার সম্ভাবনা খুব কম এবং রিটার্ন ও মোটামুটি পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আমি বলব আপনার বয়স যদি ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে হয় তাহলে অবশ্যই একটু ঝুঁকি নিতে পারেন। কারণ এই সময় আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্যাপাসিটি অনেক বেশি থাকে বয়স্ক মানুষদের তুলনায়। কারণ আপনার হাতে এখনো প্রচুর সময় রয়েছে আরও অনেক টাকা উপার্জনের। কিন্তু একটু বয়স্ক মানুষদের হাতে সেই সময়টা নেই আপনি যদি এখন অল্প কিছু টাকা লসও করে ফেলেন তাহলেও আপনি সেই টাকাটা ভবিষ্যতে পূরণ করতে পারবেন পরিশ্রম করে।
HDFC, HUL, ASIAN PAINTS এই সমস্ত কোম্পানিগুলির ব্যবসা অনেক ভালো। এদের BALANCE SHEET, INCOME STATMENT দেখলে খুবই ভালো লাগবে। এবং বহুদিন ধরে যেহেতু এই কোম্পানিগুলি তাদের সেক্টরে ভালো ব্যবসা করে আসছে তাই এই সমস্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা একটা সুরক্ষিত জায়গা বলেই মনে হয়। এখানে যাদের বয়স ৩৫/৪০ বছর হয়ে গেছে তাদের বিনিয়োগ করাই ভালো যারা অপেক্ষা কৃত কম ঝুঁকি নিতে পারবে। আমি চাইবো একজন বিগিনার বা নতুন কোন বিনিয়োগকারী যাদের বয়স ৩০ এর কম তারা একটু ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে বিনিয়োগ করুন এতে বেশি টাকা লাভ করার সুযোগ থাকে।
যেহেতু HDFC বহুদিন ধরে ভালো ব্যবসা করছে এবং ভালো পরিমান লাভও করছে। তাই বেশিরভাগ মানুষ যারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেন তারা HDFC এর শেয়ারে বিনিয়োগ করে থাকেন। এর ফলে প্রচুর HDFC এর শেয়ারের দাম বেড়ে যায় এবং এর ফলে সেই শেয়ারের দাম ওভারভ্যালু হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ,
আমরা যদি হঠাৎ করে সবাই বেশি বেশি করে আলু খাওয়া ধরি, যেহেতু আলুর উৎপাদন একই আছে কিন্তু চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। তাহলে আলুর দাম বেড়ে যেতে বাধ্য। ঠিক একই রকম ভাবে এই ধরনের শেয়ারের ক্ষেত্রেও হয়।
আমরা যদি ১০ হাজার টাকা এই ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগ করি এবং শেয়ারের দাম যদি ১০% হারে বাড়ে বা ১৫% হারে বাড়ে তাহলে আমাদের সেই ১০ হাজার টাকাতে কত টাকায় বা রিটার্ন পাব। তাই আমাদেরকে বিনিয়োগ করতে হবে এমন কোন শেয়ারে যে শেয়ারগুলি ১০ বা ১৫% রিটার্ন দেবে না তার একগুন দুইগুন করে রিটার্ন দেবে বা তারও বেশি। এটা করতে গেলে আমাদেরকে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে বিনিয়োগ করা শিখতে হবে। এবং এখানে আমরা তত টাকায় বিনিয়োগ করব যত টাকা আমরা হারিয়ে ফেললে আমাদের অর্থনৈতিক জীবনে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। মানে আমি তত টাকায় বিনিয়োগ করব এই ধরনের শেয়ারে যত টাকা হারিয়ে ফেললে আমার খুব একটা অসুবিধা হবে না।
শেয়ার বাছাই করার সময় নিজের মনে একটা প্রশ্ন করুন যে, আমি যে শেয়ারটা বাছাই করছি এই শেয়ারটা অন্যান্য সব বিনিয়োগকারীরা কি বাছাই করবে বা এই শেয়ারটা কি অন্যান্য মানুষেরা পছন্দ করে। যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে এই শেয়ার আপনার জন্য খুব একটা ভালো হবে না। আর যদি উত্তর না হয় তবে পছন্দ করতে পারেন।
দ্বিতীয় প্রশ্ন করতে হবে, আমি যে টাকাটা এই শেয়ারে বিনিয়োগ করব এই টাকাটা যদি আমার হারিয়ে যায় তাহলে কোন অসুবিধা হবে না তো আমার অর্থনৈতিক জীবনে। যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে আপনার এই শেয়ারে বিনিয়োগ না করাই ভালো আর যদি অসুবিধা সে রকম না হয় তাহলে আপনি এই ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারেন।
শেয়ার বাছাই করার সময় একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। কোম্পানিটা যেন ফান্ডামেন্টালি শক্তিশালী হয়,মানে কোম্পানিটার বিভিন্ন RATIO গুলো যেন ঠিকঠাক থাকে এবং অবশ্যই কোম্পানিটা যেন MIDCAP অথবা SMALL CAP এর মধ্যে থেকে হয়।